1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

কমলগঞ্জে চা-শ্রমিক নেতা পবন তাঁতির মৃত্যুবার্ষিকী পালন

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ১১১ বার পঠিত

স্টাফ রির্পোটার : পূর্ব-পাকিস্তান চা-শ্রমিক সংঘের সাধারণ সম্পাদক, চা-শ্রমিকদের মধ্যে প্রথম গ্র্যাজুয়েট, নিঃস্বার্থ, নিবেদিত প্রাণ চা-শ্রমিকনেতা পবন তাঁতির ৫৩-তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে চা-শ্রমিক সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির উদ্যোগে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ উপলক্ষে ৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় কমলগঞ্জ উপজেলার শমসেরনগরস্থ অস্থায়ী কার্যালয়ে চা-শ্রমিক সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সভাপতি রাজদেও কৈরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাস ও ধ্রæবতারা সাংস্কৃতিক সংসদ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অমলেশ শর্ম্মা। এছাড়াও আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন চা-শ্রমিক সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সহ-সভাপতি শ্যামল অলমিক, সাধারণ সম্পাদক হরিনারায়ন হাজরা, সহ-সাধারণ সম্পাদক সুভাষ গৌড়, সাংগঠনিক সম্পাদক লক্ষèীমন বাক্তি, কোষাধ্যক্ষ হেমরাজ লোহার, দপ্তর সম্পাদক রামনারায়ন গৌড়, নারী চা-শ্রমিক নেত্রী সামরতি মৃধা, সুনীল কর, শ্যামল রায় প্রমূখ।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন চরম দারিদ্র ও শোষণ-বঞ্চণাকে মোকাবিলা করে চা-শ্রমিক সন্তান পবন তাঁতি ১৯৬২ সালে বিকম পাস করে অসাধারণ মেধার স্বাক্ষর রাখেন। তিনিই চা-শ্রমিকদের মধ্যে প্রথম গ্র্যাজুয়েট। উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে তিনি আত্মপ্রতিষ্ঠার পথে না গিয়ে সমাজে শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুরে তেতইগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। মেধাবী ছাত্র, শিক্ষকতার বাইরেও তাঁর মননে ছিল স্বজাতির শোষণ-নিপীড়ন-বঞ্চণার বিরুদ্ধে তীব্র স্পিহা। তাই সেই সময় সাম্রাজ্যবাদ-সামন্তবাদ বিরোধী প্রখ্যাত শ্রমিকনেতা মফিজ আলীর সাথে পরিচয় সূত্রে তিনি পেয়ে যান মুক্তির সংগ্রামের দিশা। মালিকের দালাল শ্রীহট্ট জেলা চা-শ্রমিক ইউনিয়নের কাছে জিম্মিদশা থেকে শ্রমিকদের মুক্তির লক্ষ্যে মফিজ আলীর নেতৃত্বে ১৯৬৪ সালের ৫ এপ্রিল গঠন করা হয় চা-শ্রমিকদের সংগ্রামী সংগঠন ‘পূর্ব-পাকিস্তান চা-শ্রমিক সংঘ’। প্রয়াত পবন তাঁতি ছিলেন সেই সংগ্রামী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক, আর সভাপতি ছিলেন সীতারাম বর্মা, সহ-সভাপতি ছিলেন আরেক সংগ্রামী চা-শ্রমিক নেতা রাধাকিষণ কৈরী। চা-শ্রমিক সংঘের মূল নেতা মফিজ আলী ছিলেন সহ-সাধারণ সম্পাদক। এক ঝাঁক সৎ, সংগ্রামী, আপোসহীন নেতৃত্বের সম্মিলনে চা-শ্রমিক সংঘ অল্প দিনেই শ্রমিকদের আস্থার সংগঠনে পরিণত হয়। এর বিপরীতে চা-শ্রমিক সংঘের নেতৃত্বকে মালিক, সরকার ও দালাল নেতাদের রোষানলেও পড়তে হয়। যার কারণে সব রকম আইনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পরও চা-শ্রমিক সংঘের রেজিষ্ট্রেশন আটকে রাখা হয়। তীব্র আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমেই ১৯৬৭ সালে পূর্ব-পাকিস্তান চা-শ্রমিক সংঘ রেজিষ্ট্রশন লাভ করে, বাংলাদেশ আমলে যার নাম হয় বাংলাদেশ চা-শ্রমিক সংঘ রেজিঃ নং বি-১২৫২। তৎকালীন সামরিক স্বৈরশাসক আইয়ূব খানের রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করে চা-শ্রমিক সংঘের রেজিষ্ট্রেশন আদায়, ৯ দফা দাবিতে আন্দোলন, মফিজ আলী-সীতারাম বর্মার নামে মামলা প্রত্যাহারের আন্দোলন ইত্যাদি আন্দোলনে পবন তাঁতির ভ‚মিকা ছিল অগ্রগণ্য। চা-শ্রমিকদের আন্দোলন-সংগ্রামে তিনি এতটাই নিবেদিত প্রাণ ছিলেন যে চা-শ্রমিক সংঘের আর্থিক ব্যয় মেটাতে তিনি তার একমাত্র বাহন বাইসাইকেলটিও পর্যন্ত বিক্রি করে দিয়েছিলেন। ১৯৭১ সালের ১ ডিসেম্বর যুদ্ধের সময় পাকিস্তানী সেনারা তাঁকে রাজঘাট চা-বাগানের শিববাড়ি বস্তির দাসীবাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় এবং ৪ দিন পর ৫ ডিসেম্বর শ্রীমঙ্গল ওয়াপদার সামনে তাঁর ক্ষত বিক্ষত মরদেহ পাওয়া যায়। তাঁর এই অকাল মৃত্যুতে চা-শ্রমিক আন্দোলনের অপুরনীয় ক্ষতি হয়। চা-শ্রমিক আন্দোলনের অগ্রসৈনিক ও আমৃত্যু আপোসহীন সংগ্রামী নেতা পবন তাঁতি ১৯৪১ সালের ১ জানুয়ারি রাজঘাট চা-বাগানে জন্ম গ্রহণ করেন। সভায় তাঁর সংগ্রামী জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে চা-শ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম অগ্রসর করা দৃপ্ত অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়।
সভায় এক প্রস্তাবে এনটিসির ১২ টি চা-বাগানের শ্রমিকদের মজুরি ও রেশন পরিশোধ না করায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করে বলা হয় গত ১ ডিসেম্বর শ্রীমঙ্গল বিভাগীয় শ্রমদপ্তরের উপপরিচালকের মধ্যস্থতায় ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে ৫ ডিসেম্বর দুই সপ্তাহের মজুরি পরিশোধের সিদ্ধান্ত হলেও অদ্যাবধি শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধ না করায় শ্রমিকরা কাজে যোগ দেয়নি। ত্রিপক্ষীয় সমঝোতার মাধ্যমে শ্রমিকদের সাথে প্রতারণা করা হয়েছে উল্লেখ নেতারা বলেন শ্রমিকরা যেখানে ১২ সপ্তাহের মজুরি-রেশন বকেয়া সেখানে মাত্র দুই সপ্তাহের মজুরি ৫ ডিসেম্বর এবং ৪ সপ্তাহের মজুরি ৩১ মার্চ ২০২৫ এর মধ্যে পরিশোধ করার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্ত ৬ সপ্তাহের মজুরি পরিশোধ করা হবে না। এভাবে শ্রমিক ঠকানোর সমঝোতা হলেও এনটিসি কর্তৃপক্ষ ত্রিপক্ষীয় সিদ্ধান্ত মানেননি। সভা থেকে অবিলম্বে এনটিসির সকল শ্রমিকদের সমদুয় বকেয়া মজুরি ও রেশন পরিশোধ করা দাবি জানানো হয়।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..